শিক্ষার জাতীয় লক্ষ্যসমূহ লিখুন।
প্রশ্ন : শিক্ষার জাতীয় লক্ষ্যসমূহ লিখুন।
উত্তর ঃ বাংলাদেশের শিক্ষার জাতীয় লক্ষ্য সমূহ (The National Goals in Education) : বাংলাদেশে জনসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদকে জনগণের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে জন্য ব্যবহার করতে হলে জনগণকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করা দরকার। যাতে জনগণ দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে সত্যিকার জনসম্পদে পরিণত হতে পারে। সুনাগরিক সৃষ্টিতে এবং প্রগতিশীল সমাজ জীবনে শিক্ষার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষায় লক্ষ্য বিভিন্ন স্তর ও বিষয়ভেদে বিভিন্ন ভাবে থাকে । শিক্ষার ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যাবে যে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশে চিন্তা ও ভাবধারার বৈষম্যের জন্য শিক্ষার লক্ষ্য বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। তবে শিক্ষার একটি সার্বজনীন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে, সেটা কোন স্তরের জন্য সীমাবদ্ধ নয়; সকল স্তরের জন্যই তা প্রযোজ্য। শিক্ষা সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময়ে যেসব শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল তারাই শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে ছিলেন।
শিক্ষার লক্ষ্য সমূহ ঃ স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ১৯৭৪ সালে কুদরাত-ই-খুদা প্রথম শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট পেশ করেন। কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হয় নিম্নরূপ ঃ ১। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক যেন জাতীয় আদর্শ, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভাবধারার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মাতৃভূমি ও জনগণের কল্যাণ চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমিক, কার্যে ও চিন্তায়, ব্যবহারে যেন সর্বদা সততার পথ অনুসরণ করে চরিত্রবান, নির্লোভ ও পরোপকারী হয়ে উঠে। ২। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষাকে একটি সামাজিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করা।
৩। শিক্ষাকে সমাজের নানাবিধ সমস্যার সমাধানে এবং সামাজিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
৪। কৌশলী জনসমাজ সৃষ্টির জন্য এবং কায়িক ও উৎপাদনমুখী শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানসিকতা গড়ে তোলা । ৫। শিক্ষা গবেষণায় অনুসন্ধিৎসা ও সামাজিক অগ্রগতি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক প্রগতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯৭৪ সালের পর বাংলাদেশে আরও শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে এবং বিভিন্ন কমিশন শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতকে ভিত্তি হিসেবে ধরেছেন। সামাজিক চাহিদা, জ্ঞান বিজ্ঞানের পরিসর, মনোবিজ্ঞান ইত্যাদিতেও শিক্ষা সেগুলোকে প্রভাবিত করেছে। সংবিধানে বর্ণিত মূলনীতির মধ্যে রয়েছে ।
জাতীয়তাবাদ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা। বাংলাদেশের সংবিধানে এই মূলনীতিগুলো থেকে উদ্ভূত আরও মূলনীতির উল্লেখ রয়েছে। যেমন- দেশের অনগ্রসর মানুষকে শোষণ থেকে মুক্তি, নগর ও গ্রামগঞ্জের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ, জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার উন্নতি, সুযোগের সমতা, কার্যের অধিকার, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন। আরও আবহ গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং একটা নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা ।
জাতীয়তাবাদ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা। বাংলাদেশের সংবিধানে এই মূলনীতিগুলো থেকে উদ্ভূত আরও মূলনীতির উল্লেখ রয়েছে। যেমন- দেশের অনগ্রসর মানুষকে শোষণ থেকে মুক্তি, নগর ও গ্রামগঞ্জের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ, জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার উন্নতি, সুযোগের সমতা, কার্যের অধিকার, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন। আরও আবহ গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং একটা নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা ।
কোন মন্তব্য নেই